বউ এর ভালবাসা


গল্পঃবউ এর ভালবাসা 

বউ এর ভালবাসা



অবশেষে বাবা মায়ের জোরাজোরিতে
বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেলাম।আসলে এই
বিয়ে করতে আমি রাজি ছিলাম না।অবশ্য
রাজি ছিলাম না বললে ভুল হবে বিয়ে
করার কোন ইচ্ছাই ছিল না আমার।কিন্তু মা
বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আর তাদের
জোরাজোরিতে অবশেষে রাজি হইতে
হলো।আমি রুপ।একটা সফটওয়্যার
কোম্পানিতে চাকরি করি।কয়েকদিন হলো
চাকরিতে জয়েন করছি তাই বিয়ে করার
কোনো ইচ্ছায় নেই এখন।কোনে লাইফটা
কিছুদিন ইনজয় করতে চাইলাম তা না বাবা
তার বন্ধুর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে
দেওয়ার জন্য লেগে আছে।আপনারা ভাবতে
পারেন আমি স্যাকা ট্যাকা খাইছি নাকি
আবার।কিন্তু দুঃখের কথা আর কি বলব
পড়াশোনার পেছনে সময় দিতে গিয়ে এসব
প্রেমের ব্যাপারে আর ভাবা হয় নি।যাই
হোক এখন বিয়ের জন্য রেডি হতে হবে কারন
সামনের সপ্তাহে আমার বিয়ে।মানুষের
বিয়ে নিয়ে বউ নিয়ে কতরকমের স্বপ্ন
থাকে আর আমি মনে মনে ঠিক করে রাখছি
যে আমার বউ যে হবে তাকে প্রথম কয়েক
মাস একটু কষ্টে রাখব।কারন কোন জিনিষ
যদি বিনা কষ্টে পাওয়া যায় তাইলে সেই
জিনিষের মূল্য থাকে না।তাই ভাবলাম
ওকে প্রথম কয়েক মাস একটু কষ্টে রাখব।তো
যেই ভাবা সেই কাজ।বিয়ের জন্য সবাই
রেডি হচ্ছে।আমাদের বাড়িতে আত্বীয়রা
সব আসা শুরু করে দিয়েছে।
আর মাত্র বিয়ের আর দুইদিন বাকি আছে।ও
আমার বউ থুক্কু হবু বউ এর নাম আখি।আমার
বোনের কাছ থেকে শুনছি।তো রাতে শুয়ে
শুয়ে ফেসবুক চলাচ্ছি তখন একটা অপরিচিত
এক নাম্বার থেকে ফোন আসল।তো রিসিভ
করতেই ওপাশ থেকে একটা মেয়ে বললঃ
-বাহ আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলে বুঝি
(মেয়েটা)
-(অবাক হয়ে)কে আপনি?আমি কেন আপনার
জন্য অপেক্ষা করতে যাব?(আমি)
-আমি আখি।আমাকে তুমি করে বলো।আমি
তোমার হবু বউ বুজলে লুপবাবু(আখি)
কত বড় সাহস মেয়েটার আমার নামের বিকৃত
করে ডাকছে।অনেক রাগ হলো তবুও শান্ত
গলাই বললাম
-আপনি কেন ফোন দিয়েছেন?আমার এখন
কোন অপরিচিত মহিলার সাথে কথা বলার
ইচ্ছা নেই?(আমি)
-কি বললি তুই আমি মহিলা?(রাগী কন্ঠে)
-তা নয়ত কি কচি খুকি নাকি(মজা নিয়ে)
-কুত্তা,বিলাই,শয়তান।তোকে হাতের কাছে
পেলে না খুন..
টুট টূট টূট।কথাটা শেষ করার আগেই ফোন
কেটে দিছি।কি ডেঞ্জারাস মেয়েরে
মাইরি।বিয়ের আগেই বররে তুই তুই করতেছে
না জানি বিয়ের পর আমার সাথে কি
করবে।এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে ঘুমায়
গেছি মনে নাই।ঘুম ভাঙল বউদিদের ডাকে।
উঠেই দেখি আমার সব মামাত কাকাত
ভাইয়ের বউরা আমাকে ঘিরে বসে আছে।
আমাকে জাগতে দেখে আমার এক বউদি
বললঃ
-দেখ তোরা রাজপুত্রের ঘুম ভাঙছে(বউদি)
-হুম আমাদের সতিন কে আনার অনেক তাড়া
তো তাই আজকে জলদি উঠে পরছে(আরেক
বউদি)
বউদির কথা শুনে একটু লজ্জা পেলাম।আর
ওরা তো হেসেই শেষ।এরই মাঝে আবার
আখি ফোন দিছে।নাম্বারটা আখি ডাইনী
দিয়ে সেভ করে রাখছিলাম।ওর ফোন দেখে
আমার বড়বউদি বললঃ
-এই চল রে সবাই।তোদের সতিন তোদের
জামাইকে ফোন দিছে(হাসতে হাসতে)
-হুম চল চল।ওদের একা একটু প্রেম করতে দে
(ছোটবউদি)
তারপর সবাই হাসতে হাসতে চলে গেল।আর
আমারও ওর সাথে কথা বলার ইচ্ছা নেই।
কারন বিয়ের পর বউকে একটু প্যারাই রাখতে
চাইছিলাম তাই ওর ফোন না ধরে ফোনটা
সুইচ অফ করে ফ্রেস হতে চলে গেলাম।
আজকে আমার বিয়ে।এই দুইদিনে ও আমাকে
অনেকবার ফোন দিছে কিন্তু আমি ধরিনি।
যাই হোক এখন শুভদৃষ্টির জন্য বউকে আনা
হলো।বউ দেখি দুইটা পান পাতা দিয়ে মুখ
ঢেকে মিটি মিটি হাসতেছে।কিন্তু ওর
হাসির মানেটা আমি বুজলাম না।যাই হোক
এবার আমাদের শুভদৃষ্টির জন্য যেই না পান
পাতা দুইটা সরাল ওমনি আমি তো একটা
সেই লেভেলের শক খেলাম।মানুষ নিজের
হবু বউকে দেখে ক্রাস খাই আর আমি শক
খেলাম।আপনারা হইত ভাবছেন কি এমন
কারনে শক খাইতে পারি।তাইলে কি মেয়ে
কালো নাকি ও অন্য কোন প্রবলেম আছে।
আরে না রে ভাই মেয়ে ভগবানের
আর্ষীবাদে অনেক সুন্দরি।অবশ্য মা
আমাকে মেয়ের ফোটো দিয়েছিল দেখার
জন্য।কিন্তু আমি বিয়েতেই রাজি ছিলাম
না তো ছবি দেখা তো দুরের কথা।সে যাই
হোক কিন্তু এত দেখি মিষ্টি।আমার সাথে
একই ভার্সিটিতে পরত।আমাকে অনেকবার
প্রোপোজও করেছে।কিন্তু পড়াশোনা নিয়ে
ব্যস্ত থাকার কারনে ওকে গুরুত্ব না দিয়ে
মানা করে দিয়েছিলাম।কিন্তু ও এখানে
কেন।যাই হোক তো শুভদৃষ্টির সময় আমি ওর
পাশে থাকা একটা মেয়ের দিকে তাকিয়ে
ছিলাম।কারন আমার মনের ইচ্ছাটা পুরুন
করতে হবে তো।ওকে ওতটা পাত্তা এখন
দেওয়া যাবে না।ওর দিকে বেশি কথা বলা
যাবে না।ওর দিকে তাকানো যাবে না।
সর্বপরি ওকে অবহেলা করে চলতে হবে
আমাকে কয়েক মাস তারপর ওকে আমার
সর্বচ্চো ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিব।তার
জন্যই ওর দিকে না তাকিয়ে ওই মেয়েটার
দিকে তাকিয়ে ছিলাম।তো ভালভাবেই
বিয়েটা শেষ করে বউ নিয়ে বাড়ি চলে
আসলাম।এখন আমি বাসার ছাদে দারায়
আছি।আর আমার বউ রুমে আছে।সবাই
ওখানে আছে তাই আমি আর যায় নি।একটু
পরে আমার বোন এসে বলল যে তুই এখানে
কি করিস।বউদি ঘরে একা বসে আছে যা
রুমে যা।আমি না বলা সত্তেও আমাকে
জোর করে রুমে ঢুকাই দিল।রুমে গিয়ে দেখি
বউ আমার ইয়া বড় একটা ঘোমটা দিয়ে বসে
আছে।আমি আসতে আসতে খাটের পাশে
গিয়ে দারালাম।তারপর ওখান থেকে
বালিশ নিয়ে সোফার দিকে পা বারাতেই
বউ আমার হাত ধরে বললঃ
-আমাকে তোমার পছন্দ হয়নি?তুমি কি এই
বিয়েতে খুশি হওনি?(আখি চোখ ছলছল
করছে)
-আসলে আমি বিয়ের জন্য রাজি ছিলাম
না।শুধু বাবা মায়ের কথা ভেবে এই বিয়ে
করেছি(আমি)
-আচ্ছা তাইলে তুমি খাটে ঘুমাও আমি
সোফায় যাচ্ছি(কাদতে কাদতে)
-না আপনি এখানে ঘুমান আমি সোফায়
ঘুমাচ্ছি(আমি)
-কি বললি তুই আমাকে আপনি বললি কেন?
আমি কি তোর পর কেউ(রাগ নিয়ে)আজব।
একটু আগে যে কাদছিল সে এখন রাগী চোখে
আমার দিকে তাকাই আছে
-চুপ(আমি)
-কি হল কথা বলছিস না কেন হুহ?আর
শুভদৃষ্টির সময় আমার দিকে না তাকিয়ে
নিধির দিকে তাকিয়ে ছিলি কেন?(রাগে
কটমট করতে করতে)
-নিধি কে?(আমি)
-আমার ছোট বোন।তুই ওর দিকে কেন
তাকালি বল?(কলার ধরে)
-এমনি।আমার ইচ্ছা তাই(বউ আগে আগে
দেখো হতা হে কেয়া)
তারপর আমি গিয়ে সোফায় ঘুমায় পরলাম।
মাঝরাতে কারও কান্নার শব্দে ঘুম ভাঙে
গেল।দেখি আমার বউ আমার পা ধরে
কাদতেছে।ওর ওই কান্না ভরা মায়া মুখ
দেখে খুব কষ্ট হল আমার।কিন্তু আমি তো
এরকমি কিছু করতে চাইছিলাম।তারপরদিন
থেকে আমার ইচ্ছা অনুযায়ী আখির সাথে
সংসার করা শুরু করলাম।প্রয়োজন ছাড়া ওর
সাথে কথা বলি না।অফিসে থাকা কালীন
সময় প্রতিদিন ফোন দিয়ে শুনত যে আমি
খাইছি কি না।আমি বলতাম হ্যা খাইছি।
কারন আমি জানি আমি না খেলে ও খাবে
না।ছুটির দিন গুলাতে ওকে নিয়ে বাইরে
ঘুরতে যেতাম।অবশ্য আমার যাওয়ার ইচ্ছা
থাকলেও আমি যাইতে চাইতাম না ওকে
একটু প্যারা দেওয়ার জন্য কিন্তু কি আর
করার বাবার হুকুম ছিল ওকে নিয়ে বাইরে
যাওয়ার তাই ইচ্ছা না থাকলেও নিয়ে
যাওয়া লাগত।ঘুরতে যাওয়ার সময় ও অনেক
সুন্দর করে সাজত।কিন্তু আমি ওর দিকে
তাকাতাম না।কিন্তু আরালে ঠিকই ওর
দিকে তাকিয়ে থাকতাম।রিক্সা করে
ঘুরার সময় ও বলত যে তোমার হাতটা ধরে
একটু কাধে মাথা রাখি।কিন্তু আমি তা
করতে দিতাম না।অফিসে বের হওয়ার সময়
ও আমার টাই পরানোর জন্য আমার সামনে
আসত কিন্তু আমি টাই টা ওর কাছে থেকে
নিয়ে নিজেই পরে চলে যেতাম।ওকে
সর্বপরি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতাম।
এভাবেই কেটে গেল ছয়টি মাস।কিন্তু এর
মাঝে একটু একটু করে ওকে অনেকটা
ভালবেসে ফেলছি আমি।একদিন রাতে শুয়ে
আছি তাই ভাবলাম একটা নাটক করি যাতে
শেষ বারের মত বউকে একটু কষ্ট দেওয়া যাই
তাই ও রুমে আসতেই আমি আমার অফিসের
এক মেয়ে কলিগ কে ফোন দিলাম আর
বললামঃ
-হ্যা জানু ঠিক মত বাড়িতে গিয়েছো তো?
(আমি)
-হ্যা।তুমি ঠিকমত গিয়েছো(কলিগ
মেয়েটি।আসলে ওকে আগে থেকে বলে
রাখছিলাম এই নাটকটি করার জন্য)
-রাতে খাইছো(আমি)
-হ্যা।তুমি(কলিগ মেয়েটি)
-হুম।কিন্তু তোমার ঠোটের ওই মিষ্টি না
খেলে যে আমার পেটের ভাত হজম হয় না
(বউকে একটু রাগানো জন্য)
-হুম।কালকে দিবনে।এখন ঘুমাও।উম্মমা(কল
িগ মেয়েটি)
-হুম তুমিও ঘুমাও।বাই(আমি)
তারপর কল কেটে দিয়ে এদিক ঘুরতেই দেখি
বউ আমার কাদছে।আর কি সব বলতেছে।মনে
হয় আমার ওই কলিগ কে বকতেছে।সে যাই
হোক আমারও একটু খারাপ লাগল কিন্তু আর
না আমি কালকেই ওকে সব সত্যিটা বলে
দিব।ওকে আর এত কষ্ট পেতে দিব না।সো
যেই ভাবা সেই কাজ সকালে ঘুম থেকে
উঠেই আমি একটা কাগজে আমার এতদিন
কার সমস্ত প্লান আর ওই নাটকটি সম্পর্কে
লিখলাম।ও দেখি এখনও ঘুমাচ্ছে।তারপর
ওটা ওর মাথার বালিশের পাশে রেখে
আমি বাইরে চলে গেলাম।
বাইরে থেকে বাড়ি এসে শুনি বউ নাকি
আমার উপর রাগ করে বাপের বাড়ি চলে
গেছে।রাগ করাটাই স্বাভাবিক কারন ওর
জন্য যে কাগজটা রেখে গেছিলাম সেটা ও
কুটি কুটি করে ছিড়ছে।বুজতেই পারছি
অনেক রেগে আছে আমার উপরে।আজ
পাগলিটার জন্মদিন তাই বাইরে গেছিলাম
সব ব্যবস্থা করতে।ওকে সারপ্রাইজ দেওয়ার
জন্য।কিন্তু বাড়ি এসে শুনি উনি চলে
গেছেন।তো আর কি করার বউকে আনা আর
বউ এর রাগ ভাঙনোর জন্য গেলাম আমার
শশুর বাড়িতে।বেশি দূর নয় মাত্র
৩০মিনিটের পথ।তো সেখানে গিয়ে দরজায়
নক করতেই আমার শাশুড়ি মা এসে দরজা
খুলে দিল।তাকে প্রনাম করার পর সে
আমাকে ভেতরে বসতে বলল এবং একটু পর
আমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসল।কিন্তু
আমার মন পরে আছে আমার বউ এর উপর।তাই
অল্প নাস্তা করেই শাশুড়ি মাকে জিজ্ঞাস
করলাম যে আখি কোথাই?তিনি বললেন যে
ছাদে আছে।সকাল থেকে এসে নাকি কিছুই
খাইনি ও।তাই আমিও আর দেরি না করে
ওখানে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি আমার বউ
আর সালি ছাদের এক কোনাই দারাই আছে।
সালিকে দেখে আবার মনের ভেতর দুষ্ট
বুদ্ধি চাপল।তাই ওদের কাছে গিয়ে
বললামঃ
-আরে নিধি কেমন আছো(আমি)
-জি ভালই আছি।আপনি কেমন আছেন?কখন
আসলেন(নিধি)
-এইত একটু আগে।তোমাকে অনেক দিন দেখি
না তাই চলে আসলাম(একটু হাসি দিয়ে)
-তাই নাকি জামাইবাবু(লজ্জা পেয়ে)
ওইদিকে তাকিয়ে দেখি আর একজন রাগে
ফুসতেছে।মনে হয় আমাকে আস্ত চিবিয়ে
খাবে।তাই আর একটু রাগানোর জন্য
নিধিকে বললামঃ
-বিয়ের দিনের ওই মিষ্টিটা কিন্তু অনেক
ভাল ছিল।কোন দোকান থেকে কিনছিলা
(আমি)
-আরে না জামাইবাবু।ওই মিষ্টিটা তো
আমি নিজের হাতে আপনার জন্য অনেক
ভালবেসে বানাইছিলাম(ও হইত বুজতে
পারছে ব্যাপারটা।যায় হোক ভালই হলো
)
-তাই তো বলি এত স্বাদ কেন(আমি)
এবার মনে হয় আখি আর সহ্য করতে পারছিল
না তাই জোরে করে বললঃ
-নিধি মা তোকে ডাকছে নিছে যা(আখি
রাগ নিয়ে)
-কয় না তো।আমি তো শুনতে পাইনি(নিধি)
-বললাম না মা ডাকছে।যা এখান থেকে যা
বলছি(রাগে চোখ লাল হয়ে গেছে)
-নিধি নিছে চলে যাও।নয় তোমার দিদি
তোমাকে ভশ্ব করে দিবে(হাসি মুখে)
-ঠিক আছে জামাইবাবু(নিধি চলে গেল)
এবার আখি আমার দিকে এগিয়ে এল।মুখ
দেখে মনে হচ্ছে আমাকে আস্ত চিবিয়ে
খাবে।কাছে এসেই আমার কলার ধরে বললঃ
-এখানে কেন এসেছিস হুহ?(আখি)
-সালিকে দেখতে(এইরে কি বলে ফেললাম)
-কিইইইইইই?(রেগে)
-না মানে তোমাকে দেখতে।তোমাকে
নিয়ে যেতে এসেছি(আমি একটু ভয় পেয়ে)
-আমি তোর কে হয় যে আমাকে নিয়ে
যাবি।তোর তো জানু আছে।যা না ওখানে
যা(অভিমানি কন্ঠে)
দেখেছেন এখনও আমার ওই কলিগকে নিয়েই
পরে আছে।তাই বললামঃ
-তুমি এখনও ওখানেই পরে আছো।আরে ওইটা
নাটক করছি(আমি)
-সত্তিইইই?(আখি)
-হুম(আমি)
-এখানে এসে তাইলে নিধির সাথে কেন
কথা বললি(দেখেছেন নিজের বোনকেও সহ্য
করতে পারে না)
-আরে একমাত্র সালি।একটু কথা না বললে
চলে নাকি(আমি)
-না তুই আমি ছাড়া আর কোনো মেয়ের
সাথে কথা বলবি না।আমার বোনের
সাথেও না।যত কথা আছে আমার সাথেই
বলবি(আখি)
-আচ্ছা আমার পাগলি বউ(আমি)
-হুম পাগলি।শুধু তোমার পাগলি(আমাকে
জড়িয়ে ধরে)
তারপর ওকে নিয়ে রাতে নিজের বাসায়
চলে আসলাম।আজকে আমাদের নতুন করে
বাসর হবে।তাই রুমটা অনেক ভাল করে
সাজাইছি।রুমে ঢুকে দেখি বউ আমার ঘুমটা
দিয়ে বসে আছে আগের বারের মতই।কাছে
যেতে ও উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে
বুকে মাথা রেখে আছে।একটু পরে দেখি
আমার পাঞ্জাবী ভিজে যাচ্ছে।ব্যাপার
কি আবার কাদছে কেন?সেটা জানতে ওকে
জিজ্ঞাস করলামঃ
-কি হল কাদছো কেন?(আমি অবাক হয়ে)
-নিশ্চুপ(আখি কেদেই যাচ্ছে)
-কি হল কথা বল না কেন?(আমি একটু রাগ
নিয়ে)
-নিশ্চুপ(আখি)
-কি হলো কথা বলবে না তো।আচ্ছা ভাল
থাক তুমি(রাগ নিয়ে)
এবার মুখে কথা ফূটল।বললঃ
-দেখেছো কেমন লাগে।তুমি এতদিন আমার
সাথে তেমন একটা কথা বলতে না।আমি
তোমার জন্য সাজতাম কিন্তু তুমি আমার
প্রশংসা করা তো দূর আমার দিকে
তাকাতেও না।বাবা বলত বলে ঘুরতে নিয়ে
যেতে নিজে ইচ্ছা করে কোনো দিন নিয়ে
যাইতে না।আবার ঘুরতে নিয়ে গেলেও
আমার থেকে দূরে দূরে থাকতে।প্রতিদিন
রাতে আমি একা একা ঘুমাতাম কোনোদিন
আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাও নি তুমি।আমার
কষ্ট হত না বুজি(অভিমানী কন্ঠে বলল
আখি)
-ওও।আমার বাবুনিটা বুজি এই জন্য কাদছে।
আচ্ছা যাও এখন ভালবাসা দিয়ে সব পুষিয়ে
দেব।হিহিহি
-এই একদম দুষ্টুমি করবা না বলে দিলাম
(আখি লজ্জা পেয়ে)
-তা বললে হয় নাকি।আমার দশটা নয় পাচটা
নয় একটা মাত্র বউ তার সাথে একটু দুষ্টুমি
না করলে কি হয়(আমি)
-না।আমাকে টাচ করবা না তুমি(আখি)
-আচ্ছা(মন খারাপ করে)
এখন আমি শুয়ে আছি আর ঘড়ি দেখছি কখন
বারটা বাজবে।পাগলিটা আমার বুকে
মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।দেখেছে
ন একটু আগে যে আমাকে বলল তাকে টাচ না
করতে সেই আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে
আসলেই মেয়েদের মন বুজা ভারি মুশকিল।
যাই হোক ওর মুখের দিকে তাকাতে দেখি
এক মায়াবী আভা ফুটে উঠেছে ওর মুখে।
ইচ্ছা করছে এই মুখের দিকে আজীবন
তাকিয়ে থাকি।যায় হোক আমাকে আবার
রেডি হতে হবে ওকে সারপ্রাইজ দেওয়ার
জন্য।তাই আমি উঠে পরলাম।তারপর নিজে
রেডি হয়ে ওর জন্য আনা নীল শাড়িটা ওর
পাশে রাখলাম।তারপর সব কিছু ঠিকঠাক
করতে চলে গেলাম ছাদে।ছাদে গিয়ে ওর
ফোনে টেক্স করালাম যে ছাদে শাড়িটা
পরে সেজেগুজে ছাদে আসতে।আর এদিকে
হটাৎ আখির ঘুম ভেঙে গেলে আমাকে
পাশে না দেখতে পেয়ে অস্তির হয়ে যাই
ও।কিন্তু আমার টেক্স আর শাড়িটা দেখে
একটু শান্ত হয়।তারপর কথা মত শাড়ি পরে
সেজেগুজে ও ছাদে আসল।আসার সাথে
সাথেই আমি পেছন থেকে ওর চোখ চেপে
ধরলাম।তারপর ওকে নিয়ে গেলাম যেখানে
কেকটা রাখছিলাম।তারপর ওর চোখ ছেরে
দিতেই সবাই বলে উঠল হ্যাপি বার্থডে
আখি।সবাই বলতে আমার মা বাবা বোন
আর আমি।এসব দেখে ওর তো চোখ ছলছল
করছে।তারপর ও কেক কেটে সবাইকে
খাওয়ালো।তারপর সবাই নিচে চলে গেল।
আর আমি আর আখি এখন ছাদে আছি।সবাই
চলে যাওয়ার সাথে সাথেই ও আমাকে
জড়িয়ে ধরে বললঃ
-কুত্তা বিলাই আমাকে এত ভালবাসিস কেন
হুহ?(আখি)
-বা রে আমি আমার বউকে ছাড়া কাকে
ভালবাসব শুনি।অফিসের ওই কলিগকে
(আমি)
কলিগের নাম শুনেই ও আবার রেগে গিয়ে
বললঃ
-না তুই শুধু আমাকে ভালবাসবি।তুই শুধু
আমার।আর কারও না।(আখি)
-হুম।আচ্ছা বিয়ের দিন তুমি ওমন হাসছিলে
কেন?(আমি)
-ভার্সিটির শেষ দিন কি বলেছিলাম মনে
আছে।বলেছিলাম আজকে তুমি আমাকে
ফিরিয়ে দিলেও একদিন ঠিকই আমি
তোমাকে আমার করে নিব।তাই যখন
দেখলাম যে আমার সাথেই তোমার বিয়ে
হচ্ছে তাই খুব হাসি পাচ্ছিল।
-ও এই জন্য হাসছিলে তুমি(আমি)
-হুম।আমাকে ছেড়ে যাবে না তো?(কান্না
করে)
এর মাঝে আবার কেদেও দিছে।বাহ বাহ।
-না গো পাগলি তোমাকে ছেড়ে কোথাই
যাব বল(আমি)
-তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে আমি মরেই যাব
(কেদে কেদে)
-জি না।তুমি মরার আগেই আমি নিজেই..
কথাটা শেষ করার আগেই কারও ঠোটের নরম
স্পর্ষে আমার ঠোট আটকে গেল।কিন্তু
ভাগ্যে না থাকলে ঘি ঠকঠকায়ে হবে কি।
এই সুখের সময় কে যেন ছাদের দরজাই নক
করতেছে।তাই আমি বললামঃ
-কোন হুইমন্দির পুত রে সুখের সময় বিরক্ত
করে(জোরে করে)
-আবে আমি তোর বাপ বে।এত রাত পর্যন্ত
ছাদে কি করিস।যা বৌমাকে নিয়ে ঘরে
যা হারামজাদা(রাগী গলাই)
-হুম বাবা যাচ্ছি তো(হায়রে কপাল)
এদিকে বউ আমার আমাদের বাপ ছেলের
কান্ড দেখে হেসেই খুন। 




Tags:


LoveStory, বাংলা গল্প, প্রেমের কাহিনী, গল্প সাহিত্য, অনলাইন গল্প, বাংলা অসমাপ্ত গল্প, bangla story, online story, GetStory, GetStory.tk , Story Land, গল্পের শহর, writeryou, বউ এর ভালোবাসা, bow er valobasa, wife love, wife's love

Post a Comment

Thanks for Reading 💞💞

Previous Post Next Post